সোমবার । ১৭ই নভেম্বর, ২০২৫ । ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

পাইকগাছার পাবলিক লাইব্রেরি ও জাদুঘর জরাজীর্ণ

পাইকগাছা প্রতিনিধি

অভিভাবকহীন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার পাবলিক লাইব্রেরি ও জাদুঘর। সরকার নিয়ন্ত্রিত এ প্রতিষ্ঠানটি ১০ বছর যাবৎ হয়ে পড়েছে পাঠক ও দর্শনার্থী শুন্য। দীর্ঘ কয়েক বছর চলে গেলেও উদ্যোগহীন পাইকগাছার একমাত্র সরকারি গ্রন্থাগার ও জাদুঘর।

খুলনার পাইকগাছা উপজেলার একমাত্র সরকারি পাঠাগারটি দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। পূর্বে সংস্কার ও আধুনিকায়নের আশ্বাস মিললেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একসময় ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিপ্রার্থী ও সাধারণ পাঠকদের পদচারণায় মুখরিত থাকতো এই জ্ঞান-কেন্দ্রটি। এখন পরিণত হয়েছে অব্যবহৃত ও ধুলোবালিতে ঢেকে থাকা এক নিস্তব্ধ ভবনে। উপজেলার একমাত্র সরকারি পাঠাগারটির বোবা কান্না দেখা বা শোনার যেন কেউ নেই।

পাইকগাছা পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে ১৯৮৫ সালে পাবলিক লাইব্রেরী ও যাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট স.ম বাবর আলী এটির প্রতিষ্ঠা করেন। যার আজীবন সদস্য ১৪৬ জন ও সাধারণ সদস্য ৯৩৮ জন। দু’শ বই নিয়ে শুরু হয় এর যাত্রা। পরবর্তীতে যার সংখ্যা ছিল ৫ হাজার। পাঠক ও দর্শনার্থী ছিল চোখে পড়ার মতো। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আইনজীবী, সাংবাদিক এমন কি অফিস আদালতের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন এর মুল পাঠক। লাইবেরির বিভিন্ন সংবাদপত্র থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো সংগ্রহ করে রাখায় চাকুরি প্রত্যাশিরা এখান থেকে বিজ্ঞপ্তি সংগ্রহ করতেন। কয়েক বছর যাবৎ প্রতিষ্ঠানটি নামে থাকলেও বাস্তবে এর অবকাঠামো থেকে সব কিছু বিনষ্ট হয়ে গেছে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে লাইব্রেরিতে নতুন কোন বই পুস্তক দেওয়া হয়নি। পুরাতন যেসব বই ছিল তার মধ্যে অনেকগুলো নষ্ট ও হারিয়ে গেছে। লাইব্রেরির ভবন পরিণত হয়েছে ভগ্নাদশায়। এক সময় পাঠকের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও বর্তমান তা একেবারেই শূন্যের কোঠায়।

সরকার নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানটি পাইকগাছা পৌরসভা ১৯৯৯ সালে অলিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসন থেকে থেকে নিজেরা নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার কারণে লাইব্রেরি ও জাদুঘরটি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয় ও আঞ্চলিক ৯ টা সংবাদপত্র লাইব্রেরিতে নেওয়া হতো। কিন্তু ৬ বছর যাবৎ তাও বন্ধ রয়েছে। এদিকে জাদুঘরের জানালা দরজা ভাঙা, ভেতরে যেসব দূর্লভ জিনিষপত্র ছিল তার কিছুই নেই। আছে ভাঙা আলমারী ও ময়লা আবর্জনা। যেখানে ইঁদুর ও পোকা মাকড়ে বাসা বেঁধেছে।

মাস্টার রোলে দায়িত্বে থাকা লাইব্রেরিয়ান শেখ রাকিব সিফাত বলেন, “আমি আছি না থাকার মতো। লাইব্রেরি ও যাদুঘরের করুণ অবস্থা এখানে চাকুরি করার কোনো পরিবেশ নেই। এখানেও কেউ আসেনা।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মাহেরা নাজনীন বলেন, “লাইব্রেরি ও জাদুঘরটি যাতে পুনর্জীবিত করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন